রিজার্ভ বাড়াতে ডলারের জোগান দিতে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিকল্পনা
বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে জায়গা ভাড়া দিয়ে চলতি বছরেই বাংলাদেশের রিজার্ভে আরও ৪ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার জোগান দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। ডলার সংকটের মুখে রিজার্ভ বাড়াতে বন্দর ও বে টার্মিনালে বিনিয়োগে আগ্রহী দেশ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে এরইমধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করার তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে।
চলতি অর্থ বছরের প্রথম মাসেই চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের রিজার্ভে। এর মধ্যে রয়েছে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল ব্যবহারের জন্য সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ের ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বে টার্মিনালের চ্যানেল খননের ঋণ সহায়তা হিসাবে বিশ্বব্যাংকের ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া আবুধাবী পোর্ট অথরিটির দেড় বিলিয়ন ডলারও রয়েছে এই তালিকায়। তাছাড়া সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটির এক বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশের রিজার্ভে যোগ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, ‘এ বছর ৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভে জোগান দেয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল। এরইমধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার এই বন্দরের মাধ্যমে দেশের রিজার্ভে যুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। অন্তত পক্ষে আর ২ থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলার এ বছরের মধ্যে জোগান দেয়া খুবই সম্ভব বলে আশা করছি।’
নগরীর পতেঙ্গা বে টার্মিনালে সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি, আবুধাবী পোর্ট অথরিটি এবং ডি পি ওয়ার্ল্ড বিনিয়োগ করবে তা অনেকটা নিশ্চিত। সেইসঙ্গে লালদিয়ার চর এলাকায় বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে ডেনমার্কের প্রতিষ্ঠান মার্কস লাইন। পাশাপাশি নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় আগ্রহী বিদেশিরা।চুক্তি অনুযায়ী, বিনিয়োগে আগ্রহী বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো চট্টগ্রাম বন্দরের জায়গায় অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি ২২ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত টার্মিনাল কিংবা জেটি পরিচালনা করবে।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘দেশের রিজার্ভ বাড়ানোসহ বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়া দেয়াকে আমরা স্বাগত জানাই।’
শুধু চট্টগ্রাম বন্দর কিংবা বে টার্মিনাল নয়, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের কাছেই স্বতন্ত্র একটি ইকোনোমিক জোন গড়ে তোলার আগ্রহ দেখিয়েছে জাপানি সংস্থা জেটকো।
এব্যাপারে পিএইচপি অটোমোবাইল ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকতার পারভেজ বলেন, যদি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের কাছেই একটা ইকোনোমিক জোন গড়ে তোলা যায়, তাহলে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান করা সম্ভব হবে। এছাড়া আমদানি-রফতানি করার প্রক্রিয়াও সহজ হয়ে দেশের বাণিজ্যে বড় ধরনের ইাতবাচক প্রভাব ফেলবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ কেন্দ্রিক অন্তত ৩ লাখ কোটি টাকার পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি ও রফতানি হচ্ছে, যা থেকে সরকারের রাজস্ব আসছে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা।
সূত্র-সময় নিউজ
মতামত দিন