নতুন বাংলাদেশের দিকে যাত্রা ন্যায়ের ওপর দাঁড়িয়ে হবে
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। প্রশাসনে এখনো ফ্যাসিস্টদের দোসররা বসে আছে। বিভিন্ন কাঠামোতে তারা বসে আছে। তারা খুনীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। তারা যেন খুনীদের আড়াল করতে না পারে। আপনারা যদি এদের বিচার করতে না পারেন তাহলে কেন দায়িত্ব নিয়েছেন? বিচার আপনাদের করতেই হবে। এটাই বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খা।শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের মিশনপাড়া এলাকায় হোসিয়ারি সমিতি মিলনায়তনে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণ সভায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
সাকি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এ সরকার শহিদদের তালিকা প্রকাশ করবে। একজন শহিদের তালিকাও যেন বাদ না যায়। দল হিসেবে আমরা চেষ্টা করছি, আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু সরকারের সক্ষমতা আছে। এই শহিদেরা শুধুমাত্র নাম নয়, একেকটি সম্ভাবনাময় জীবন। কী নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করছে এই ছেলেরা। অন্তত ৫০০ যুবক চোখ হারিয়েছে। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে যেন ভাবতে না হয়। সেভাবে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের সকলের দায়িত্ব আছে। তবে সরকারকে বলব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ তালিকা প্রস্তুত করুন। নতুন বাংলাদেশের দিকে যাত্রা ন্যায়ের ওপর দাঁড়িয়ে হবে। কোনো শহিদ পরিবারকে যেন বলতে না হয় আমরা বিচার পেলাম না। এ সকল হত্যার দোসর ও নির্দেশদাতারা কোথায় গেল। আমরা শুনতে পারছি তারা পালিয়ে গেছে, এখনো পালিয়ে যাচ্ছে। তারা কীভাবে আইনের মুখোমুখি না হয়ে পালিয়ে যাচ্ছে সরকারকে তার জবাব দিতে হবে। আমরা তাদের বিচারের মুখোমুখি দেখতে চাই।
সংবিধানে সমস্ত ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত। যারাই ক্ষমতায় গেছে তাদের জমিদারির মতো দেশ চালানোর ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। ফলে আমরা মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার পাইনি। আমাদের ভোটাধিকারসহ হরণ করা হয়েছে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশ চলবে ১৯৭১ সালের বৈষম্যহীন বাংলাদেশের চেতনায়। ওরা আবার এটি মনে করিয়ে দিয়েছে। এখানে কেউ পাবে, কেউ পাবে না, সেটা আর হবে না। আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত লাগবে। সেটার জন্য জনতার সংবিধান লাগবে। তার জন্য আইনের সংস্কার করতে হবে। এর মধ্যদিয়ে রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক হবে। এ কাজগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের সকল স্তরের মানুষ যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। তাদের দাবি পেশ করতে পারে। এ দেশের মেহনতি মানুষ কী আন্দোলন করতে পেরেছে? প্রেসক্লাবে অধিকার ভিক্ষার মতো চাইতে হয়েছে। উন্নয়ন মানে শুধু বড় বড় স্থাপনা নয়। মানুষের জীবন মান তাদের বাচ্চাদের শিক্ষা, চিকিৎসা, পারিবারিক ভবিষ্যত গড়ে উঠলে সেটাকে উন্নয়ন বলে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে মানুষ অধিকার চাইতে পারে এবং সরকারকে তা শুনতে হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি ফারহানা মানিকসহ অন্যান্যরা।
মতামত দিন