ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে ইরানের পাশে রাশিয়া, চীন ও কাতার
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে মুসলিমদের পরম বন্ধু সেটি তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন। ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে সবসময়ই উচ্চকণ্ঠ ছিলেন রুশ নেতা। ইরানের সাথে সব সময়ই গভীর বন্ধুত্ব বজায় রেখে চলেছেন পুতিন। দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব অব্যাহত রাখতে গোপনে ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন আদান প্রদানও চলে।
ইসরাইলে হামলার মাত্র একদিন আগেই তেহরানে গিয়েছেন রুশ প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিসুতসিন। বৈঠক করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সাথেও। সেই বৈঠকের কথা জানার পর বহু বিশ্লেষকের ধারণা, ইসরাইলে ইরানের হামলার পেছনে পরোক্ষ সায় ছিলো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের।সেই ঘটনা ছিলো পরোক্ষ, এবার সরাসরি ইরানের সাহস এবং ইসরাইলের আগ্রাসন নিয়ে উচ্চকণ্ঠ পুতিনের প্রশাসন। মধ্যপ্রাচ্য সংকটের নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্র যে কলকাঠি নাড়ছে-সেই ব্যাপারে সরাসরি ক্ষোভ ঝেড়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।তিনি বলেছেন, পূর্ব এশিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতিতে এই অঞ্চলে অশান্তি আরও বৃদ্ধি করেছে। মধ্যপ্রাচ্য সংকটে পুরোপুরি অকৃতকার্য বাইডেন প্রশাসন। টেলিগ্রামে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেছেন, এ সংঘাত একটি রক্তাক্ত নাটক, যা শুধু দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। বাইডেনের ব্যর্থতায় মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে বলেও মন্তব্য করেন মারিয়া।
রাশিয়া তথা পুতিনের আরেক বন্ধু চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও ইরানের পরম বন্ধু। নীতিগতভাবে সবসময়ই ইরানের পাশে ছিলো শক্তিশালী দুই দেশ দুটো। মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও। তারা বলছে, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি যাই হোক না কেন চীন সবসময়ই ইরানের বিশ্বস্ত অংশীদার এবং বরাবরের মতোই ইরানকে সমর্থন করবে।পাশাপাশি লেবাননে প্রবেশের করে স্বাধীন সার্বভৌম দেশের আইন লঙ্ঘনের বিপক্ষে তেহরান। মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে চীন ন্যায়বিচার বজায় রাখবে বলেও পরোক্ষভাবে ইসরাইলকে হুমকি দিলো বেইজিং। গেল মাসে জ্যেষ্ঠ ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সময়ও তেহরানের প্রতি সমর্থন জানান শি জিনপিং।
শুধু মন্তব্য করেই থেমে থাকেননি শি জিনপিং-এর প্রশাসন। মধ্যপ্রাচ্য সংকট তথা লেবাননে ইসরাইলের আগ্রাসন নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের স্থায়ী দূত ফু কঙ্গ। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ভয়াবহ এই সংকট মোকাবেলায় সব পক্ষকে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক সমাধানের পথে আসতে হবে।ইসরাইলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েই সোজা কাতার সফরে চলে যান ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। এই সফরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সমর্থন নিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে জনমত জোরদার করতে চান নতু প্রেসিডেন্ট।বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দোহায় বৈঠকও করেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সাথে। সেখানে পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরাইল যদি ইরানের বিরুদ্ধে একইভাবে কাজ করতে থাকে তাহলে তেল আবিবকে আরও কঠোরভাবে জবাব দেবে তেহরান।
মতামত দিন