দেশব্যাপী রাষ্ট্রীয় শোক পালন, বৈষম্যবিরোধীদের প্রত্যাখ্যান
কোটা আন্দোলন নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সারাদেশ। সংঘর্ষে হারিয়েছে বহু প্রাণ। নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে আজ সারাদেশে শোক পালন করছে সরকার। এমনকী আরও শিথিল করা হয়েছে কারফিউ। অন্যদিকে এদিনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়েছে আন্দোলনকারীরের একাংশের তরফে। তাঁরা দাবি জানিয়েছেন, সমস্ত দাবি না মেনে নেওয়া পর্যন্ত চলবে এই আন্দোলন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে সারা দেশে শোক পালন করছে সরকার। আরেকদিকে, দেশব্যাপী রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছে। আন্দোলনকারীরের একাংশ সেই আন্দোলন প্রত্যাহার করার কথা জানালেও আরেকপক্ষ তা চালিয়ে যাওয়া হবে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ১জুলাই থেকে আন্দোলন শুরু করে পড়ুয়ারা। গত ১৫ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের পর সেই বিক্ষোভ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে । এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, সংঘর্ষ, হিংসা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে। সেখানে এই সংঘর্ষর ঘটনায় ২০০জনের বেশি মারা গিয়েছেন বলে দাবি করেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং সংস্থা।
তবে, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫০জন মারা গিয়েছেন বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে। সোমবার, বাংলাদেশের মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন জানান, রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ১৪৭জন নিহত হওয়ার কথা বলেছিলেন। সেটা বেড়ে ১৫০ হয়েছে বলে মন্ত্রিসভায় জানিয়েছেন তিনি। এরই সঙ্গে, কোটা আন্দোলনকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, পড়ুয়াসহ অন্যান্য নিহতদের স্মরণে মঙ্গলবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয় মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকে। মঙ্গলবার দেশব্যাপী শোক পালন করা হবে বলেও ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে এবং দেশব্যাপী সাধারণ মানুষকে গুম, খুন, নির্যাতন ও আটকের প্রতিবাদে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা৷মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর ব্যানারে মিছিলটি শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পুরাতন ফজিলাতুন্নেসা হলসংলগ্ন শহিদ স্মৃতিস্তম্ভের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন তারা। পরে পুনরায় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে দেশব্যাপী কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষদের হত্যা, তাদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও আটকের ঘটনার প্রতিবাদ জানান শিক্ষকরা। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে ‘মিথ্যা মামলায়’ রিমান্ড মঞ্জুর করার ঘটনার নিন্দা জানান।
মতামত দিন