চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র অভাবে ব্যাহত ত্রাণ তৎপরতা
মিয়ানমারে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ১,৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর ৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। হতাহতদের উদ্ধার ও চিকিৎসা সেবা এখন সবচেয়ে জরুরি। তবে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে দেশটির সরকারকে।এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যে উদ্ধারকারীরা যখন জীবিতদের সন্ধান করছেন তখন জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে, যা ত্রাণ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করছে। খবর-বিবিসি
ভূমিকম্পে রাস্তাঘাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর সঙ্গে সামরিক সরকার, বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং সশস্ত্র যোদ্ধাদের মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধের ফলে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারে কাজ করা সাহায্য সংস্থাগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে বিবিসি বার্মিজ জানিয়েছে, আবারও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হতে পারে এই আশঙ্কায় অনেক মানুষ রাতে খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। তবে বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট জোর দিয়ে বলছে, যেকোনো সহায়তা যেন স্বাধীনভাবে ও স্থানীয় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।মিয়ানমারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর মান্দালয়ের ঐতিহাসিক অনেক ভবন এই ভূমিকম্পে মাটিতে মিশে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে ধ্বংসস্তুূপ ঘেঁটে দেখছেন।
উদ্ধারকাজে যুক্ত একজন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গিয়ে অসহায় বোধ করছেন তারা। ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়া মানুষের আর্তচিৎকার ভেসে আসছে। খালি হাতেই ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছিলেন তিনি।
মান্দালয়ের আরেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, একটা হোটেল ভেঙে পড়েছে যার নিচে আটকে রয়েছেন অনেকে। পেশায় শিক্ষিকা ওই নারী বলছিলেন, আমি মায়েদের কান্নার আওয়াজ পাচ্ছিলাম। তাদের সন্তানেরা ভেঙে পড়া ওই হোটেলের স্তূপের নিচে আটকে রয়েছে। এই দৃশ্য দেখা যায় না। এই ভূমিকম্প বিপর্যয় ডেকে এনেছে। আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন। মিয়ানমারের বাসিন্দাদের অনেকের মধ্যেই আতঙ্কের ছাপ রয়েছে এখনও।
২০২১ সাল থেকে মিয়ানমার শাসন করা সামরিক জান্তা দেশটির সাগাইং, মান্দালয়, মাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেপিডো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। দেশটির দুই বড় শহর, মান্দালয় ও ইয়াংগুনের বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
মতামত দিন