প্লাবিত অঞ্চলগুলোর পানি নামতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি
বাংলাদেশে বন্যায় প্লাবিত অঞ্চলগুলো থেকে নামতে শুরু করলেও এখনো আটকে আছেন অসংখ্য মানুষ৷ প্লাবিত অঞ্চলগুলোর পরিবহনও ব্যবস্থায়ও রয়েছে বন্যার মারাত্মক প্রভাব৷এদিকে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আজ রোববার অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর৷ চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে বেশি মাত্রায় বৃষ্টি হতে পারে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে৷
শনিবার থেকেই এসব অঞ্চলে বৃষ্টির প্রবণতা বেড়েছে৷ তবে সোমবার থেকে দেশজুড়ে বৃষ্টির প্রবণতা কমার সম্ভাবনা রয়েছে৷যানজটে টানা তিন দিন পুরোপুরি স্থবির থাকার পর অবশেষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে রোববার ধীরগতিতে যান চলাচল শুরু হয়েছে৷
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মহাসড়কে মহিপাল, রামপুরসহ একাধিক অংশে গিয়ে আজ রোববার দুপুরে উভয়মুখী লেনে গাড়িগুলো ধীরগতিতে এগোতে দেখা গিয়েছে৷বন্যার স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কের একাধিক অংশে সেনাবাহিনীর ২৬ ইসিবির সহযোগিতায় সড়ক সংস্কারের কাজ করছে সড়ক ও সেতু বিভাগ৷ বন্যার পানির তীব্র স্রোতে মহাসড়কের লালপোল ও লেমুয়া অংশে ফাটলে সৃষ্টি হয় একাধিক বিশাল গর্তের৷ একইসঙ্গে ভেঙে পড়েছিল মহাসড়কের সড়ক বাঁধ৷ সেগুলো মেরামতের কাজ করছেন সেনা সদস্যেরা৷বন্যার পানির কারণে তৈরি তীব্র যানজটে বিপদে পড়েন লাখো মানুষ৷ তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছিলেন বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা৷অন্যদিকে, বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া এক শিশুকে মুমূর্ষু অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করেছিল৷ পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেলিকপ্টারে শিশুটিকে ঢাকায় এনে হাসপাতালে ভর্তি করেছে৷বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্যা উপদ্রুত এলাকায় গড়ে ১৫ সেন্টিমিটার পানি কমেছে৷বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বন্যা উপদ্রুত এলাকার ছয় নদ-নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল৷নদ-নদীগুলো হলো কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, গোমতী, মুহুরি ও ফেনী৷ এর মধ্যে সর্বোচ্চ ফেনী নদীর পানি রামগড় পয়েন্টে বয়ে যাচ্ছিল বিপৎসীমার ৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে৷ আর মনু নদের পানি মৌলভীবাজার পয়েন্টে ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল৷এবারের বন্যায় যে ১১টি জেলা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে, তার মধ্যে একটি ফেনী৷ বন্যায় পুরো ফেনী শহর জলমগ্ন হয়ে পড়েছে৷
বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি। এতে নদীর শহর রক্ষা বাঁধ দিয়ে চুইয়ে পানি বের হচ্ছে। এই নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন শহরবাসী। কুমিল্লায় বন্যা হলে পানি নামার পথ গোমতী নদী৷ এই নদী অনেকটাই ভরে গেছে৷ আর সে কারণেই পানি সরতে অসুবিধা হচ্ছে মনে করেন পাউবোর সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও বেসরকারি জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ম ইনামুল হক৷ তিনি বলেন, ফেনীর সোনাগাজীতে ফেনী নদীর বাঁধের যে রেগুলেটর আছে, সেখানকার ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার ভাটিতে চর পড়ে গেছে৷ এ ছাড়া ফেনী নদীও বেশ সংকীর্ণ৷ সাগরে পানি যাওয়ার পথও সংকীর্ণ৷ এ কারণেই এখানে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে৷ এখন এখনকার রেগুলেটরকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে আরও ভাটিতে নতুন করে তা করতে হতে পারে৷ এসব নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নতুন করে ভাবতে হবে৷
বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি৷ নদীর শহর রক্ষা বাঁধ দিয়ে চুইয়ে পানি বের হচ্ছে৷ এই নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন শহরবাসী৷
মতামত দিন