জামালপুর

জামালপুর রিক্রিয়েশন ক্লাব বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

জামালপুর শহরের পলাশগড়ে সাড়ে ৪ একর জমিজুড়ে ছিল পৌরসভার ভাগাড়। সেই ভাগাড় সরিয়ে পুরো জমি নামমাত্র দরে ২০ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয় রিক্রিয়েশন ক্লাবকে। পৌরসভার আট শহর প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় ক্লাবের সীমানাপ্রাচীর, নিজস্ব রাস্তা ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা। প্রাচীরের কারণে বন্ধ হয়ে যায় আটটি গ্রামের ২০ হাজার মানুষের চলাচলের রাস্তা। গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের এখন অনেকটা পথ ঘুরে শহরে যাতায়াত করতে হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কেউ প্রতিবাদ করলেই করা হতো নির্যাতন। তাই অনেকটা মুখ বুজেই ঘুরপথে চলাচল করতেন গ্রামগুলোর বাসিন্দারা।এদিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। তাই গ্রামগুলোর বাসিন্দারা একজোট হয়ে রিক্রিয়েশন ক্লাব বন্ধ এবং সড়কটি খুলে দেওয়ার দাবিতে গতকাল রোববার মানববন্ধন করেন। পৌর এলাকার পলাশগড়, বামুনপাড়া, রামনগর, তেঁতুলিয়া, তিরুথিয়াসহ আট গ্রামের বাসিন্দারা বিক্ষোভ মিছিলসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে মানববন্ধন করেন। জামালপুর পৌরসভার প্রশাসক শীতেশ চন্দ্র সরকার বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
পৌরসভা ও ক্লাবসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর পৌরসভার ভাগাড় ২০২১ সালে সরিয়ে জামালপুর রিক্রিয়েশন ক্লাব নামের ভিআইপি বিনোদন ক্লাবটি গড়ে তোলেন জামালপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু ক্লাবটির কোষাধ্যক্ষ। মির্জা আজমকে খুশি করতে ওই ক্লাবের উন্নয়নকাজের জন্য পৌরসভার সাবেক মেয়র ছানু কয়েক কোটি টাকার প্রকল্প দেন। প্রকল্প দিয়েছে জেলা পরিষদও। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ক্লাবটি চালু হয়। রিক্রিয়েশন ক্লাবের সদস্য হওয়ার জন্য গুনতে হতো ৫ লাখ টাকা। দলের প্রভাবশালী অনেক নেতা-কর্মী ক্লাবটির সদস্য। বর্তমানে সদস্য ৪৬৯ জন। ৫ আগস্টে পটপরিবর্তনের পর ক্লাব জ্বালিয়ে দেয় সাধারণ মানুষ। 
জামালপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, এই ক্লাবের সঙ্গে পৌরসভার কোনো স্বার্থসংশ্লিষ্টতা নেই। কাজেই পৌরসভা জায়গাটি এভাবে দিতে পারে না। 
প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরা করা হয়। এ সময় জনসাধারণের যাতায়াতের রাস্তা খুলে দেয়ার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে গ্রামবাসী।
মানববন্ধন চলাকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইফতেখার ইউনুস আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের জানান, বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসককে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম, আব্দুল হাকিম, ইঞ্জিনিয়ার আরিফ, হাবিল উদ্দিন ও রমিছা বেগম।

মতামত দিন