আন্তর্জাতিক

শ্রমিক ধর্মঘটে বন্ধ মার্কিন বোয়িং কারখানা

শ্রমিক ধর্মঘটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান বোয়িং-এর সবচেয়ে বড় কারখানার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে৷ দীর্ঘস্থায়ী কাজের চুক্তি ও কর্ম পরিবেশ উন্নয়নের দাবিতে কর্মসূচি পালনের বিষয়ে একটি ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল৷ ৯৬ শতাংশ কর্মী কর্মবিরতির পক্ষে ভোট দেয়ায় সেখানকার উৎপাদন কার্যত থেমে যায়৷প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে উড়োজাহাজ সরবরাহে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় নেয়া ও ঋণে জর্জরিত হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরেই সমালোচনায় রয়েছে৷ 

২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা প্রথম ধর্মঘট করে৷ প্রায় ৩০ হাজার ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ মেশিনিস্টস অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ওয়ার্কার্স (আইএএম) সদস্য, যারা সিয়াটল ও পোর্টল্যান্ড অঞ্চলে বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স এবং অন্যান্য জেট তৈরিতে কাজ করেন৷

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগে বোয়িংয়ের বৃহত্তম ইউনিয়নের জন্য আলোচনায় নেতৃত্বদানকারী জন হোল্ডেন বলেন, ‘‘এটি সম্মানের বিষয়, এটি অতীতকে সম্বোধন করার বিষয় এবং এটি আমাদের ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করার বিষয়৷''২৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি নিয়ে বোয়িং ও শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের মধ্যে হওয়া একটি অস্থায়ী চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে কর্মবিরতি পালন করছেন সেখানকার কর্মীরা৷ এই কর্মবিরতি আইএএম নেতৃত্বের সঙ্গে যে অস্থায়ী চুক্তি হয়েছে, তা সদস্যদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা না পাওয়ার একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে৷

উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে বলে, ‘‘আমরা আমাদের কর্মী ও ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ আমরা একটি নতুন চুক্তির জন্য আলোচনার টেবিলে বসতেও প্রস্তুত৷''হোল্ডেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার টেবিলে ফিরে আসবো৷'' তবে ধর্মঘট কতদিন স্থায়ী হবে বা কখন আলোচনা আবার শুরু হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু বলতে পারেননি তিনি৷ বোয়িং-এর ম্যাক্স ৭৭৭ ও ৭৬৭ জেটগুলো সন্নিবেশ করা সিয়াটল এলাকার বোয়িং কারখানাগুলোতে শ্রমিকরা সপ্তাহজুড়েই প্রতিবাদ করে আসছেন৷তাদের এই ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বোয়িংয়ের শেয়ারগুলোর ০.৯%  পতন হয়৷ তবে যাত্রী সুরক্ষা, উৎপাদন বিলম্ব ও ছয় হাজার কোটি ডলার ঋণের বোঝা নিয়ে ইতিমধ্যে তাদের উৎপাদন সক্ষমতা ৩৬% হ্রাস পেয়েছে৷ এই ধর্মঘট বোয়িংকে আরো কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷

ধর্মঘট দীর্ঘায়িত হলে তা শুধুমাত্র বোয়িংয়ের আর্থিক অবস্থার উপরই নয়, বরং উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারক ও সরবরাহকারীদের উপর নির্ভরশীল সংস্থাগুলোতেও প্রভাব ফেলবে৷ ২০০৮ সালে বোয়িং কর্মীদের ধর্মঘটের কারণে ৫২ দিনের জন্য কারখানা বন্ধ ছিল৷ সেসময় বোয়িংকে প্রতিদিন আনুমানিক ১ হাজার কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হয়৷চলমান ধর্মঘট নিয়ে হোয়াইট হাউস থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷

মতামত দিন