প্রয়াত সাংবাদিক মোস্তফা বাবুলের ১ম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণসভা
বুধবার (১৩ নভেম্বর) জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে প্রয়াত জামালপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বিটিভির জামালপুর জেলা সংবাদদাতা মোস্তফা বাবুলের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। প্রেসক্লাব জামালপুর ও জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক এই স্মরণসভার আয়োজন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হারুন রশিদ। এছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আমীর উদ্দিন, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনোয়ার হুসেন মুরাদ, সাবেক শিক্ষা অফিসার মেহেরুল্লাহ, বিশিষ্ট সাংবাদিক জামালপুর অনলাইন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি সাংবাদিক জাহাঙ্গীর সেলিম।
জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল অত্যন্ত মেধাবী সাংবাদিক ছিলেন।আমরা একজন মেধাবী সাংবাদিককে হারিয়ে ফেলেছি। সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তিনি সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাকে হারিয়ে আমরা শোকাহত।’
এ সময় বক্তারা বলেন, মোস্তফা বাবুলের একাধারে সাংবাদিক, কবি, লেখক, সংগঠক ছিলেন। মৃত্যুর পরেও তিনি তার কর্মময় জীবনের জন্য সবার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। বক্তারা মোস্তফা বাবুলের জীবন ও কর্ম নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।প্রেসক্লাব জামালপুর এর সাধারণ সম্পাদক ও সময় টিভির সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব জামালপুরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুখলেছুর লিখন। অনুষ্ঠানে দুটি সংগঠনের সকল কর্মকর্তা ও সকল সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল ১৯৬৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের কাশিনাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা প্রয়াত ইছাহাক আলী রেলওয়ের কর্মচারী ছিলেন। মায়ের নাম রওশন আরা। জামালপুর শহরের মুকুন্দবাড়ী এলাকায় নিজ বাসায় স্থায়ীভাবে বসবাস করে সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন মোস্তফা বাবুল।
সাংবাদিকতার পেশাগত জীবনে তিনি দৈনিক বাংলা, দৈনিক জনতা, দৈনিক জনকণ্ঠ ও দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় জামালপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাপ্তাহিক পূর্বকথার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন তিনি। তিনি বেশ কিছুদিন সাপ্তাহিক জামালপুর বার্তায় সম্পাদকীয় বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) জামালপুর জেলা সংবাদদাতা ছিলেন। সাংবাদিকতায় কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৫ সালে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব পদকে ভূষিত হন।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি কবি ও লেখক হিসেবেও মোস্তফা বাবুলের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। তার প্রকাশিত তিনটি কাব্যগ্রন্থ ‘নিষিদ্ধ স্লোগান’, ‘চারপাশে শুধু নীল মানুষ’ ও ‘শূন্যতার অভিমুখী’ পাঠক সমাদৃত হয়। সমাজের অস্পৃশ্য নারীদের জীবন কাহিনী নিয়ে লিখেছেন ‘বেশ্যাবৃত্তির সাতকাহন’ নামে একটি বই। এছাড়াও তিনি সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বাবা মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ‘মতিয়র রহমান তালুকদার স্মারকগ্রন্থ’ লিখেছেন।
মতামত দিন