জাতীয়

অস্বস্তি নিয়ে পুলিশের কাজ শুরু

দেশে এখনও নিরাপত্তা সংকট কাটেনি৷ নিজেদের নিরাপত্তা এখনও নিজেরাই নিশ্চিত করছেন সাধারণ মানুষ৷ অস্বস্তি নিয়ে পুলিশ সদস্যরা থানায় ফিরতে শুরু করলেও নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নামতে এখনও সময় লাগবে৷
সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ঢাকার ৫০টি থানার মধ্যে ২৯টি থানার কার্যক্রম শুক্রবার শুরু হয়েছে৷ তবে সহিংসতা এখনও থামেনি৷ শুক্রবার কুমিল্লায় দুই ইউপি সদস্যের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হয়েছে৷ চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ‘মিটু চৌধুরী সড়ক' এর ফলকে থাকা ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়েছে৷ নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ৷ শুক্রবার শাহবাগ মোড়ে তারা নিরাপত্তার দাবিতে সমাবেশ করেছেন৷

দায়িত্ব নিয়েই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘‘গত কয়েকদিন বিভিন্ন ধরনের অপরাধ হয়েছে৷ কোনো কোনো রাজনৈতিক দল দেশের বিভিন্ন এলাকায় দখলের সংস্কৃতিতে নেমেছে৷ দেশে গত কয়েকদিনে যেসব অপরাধ হয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে৷ এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে৷ কোনো ছাড় দেওয়া হবে না৷ সরকার এখন স্থিতিশীল পরিবেশ আনার বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করবে৷''

ভেঙে পড়া পুলিশি ব্যবস্থা পুনর্গঠনে কাজ শুরু হয়েছে৷ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানাসহ ২৯ থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে৷ থানার নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি সেনাসদস্যরা কাজ করছেন, সঙ্গে দেখা গেছে আনসার সদস্যদের৷ থানার কার্যক্রম শুরুর আগে তেজগাঁও থানা পুলিশের সহায়তায় স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠক করেছে সেনাবাহিনী৷ সাধারণ মানুষ থানার কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর ২৫ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট কোম্পানি অধিনায়ক শাখাওয়াত খন্দকার৷ তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের সহায়তায় সমাজের গ্রহণযোগ্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি৷''
প্রত্যেক বাসার নিচে কিছু লাঠি রাখা হয়েছে, যেন সবাই লাঠি নিয়ে রাস্তায় নামতে পারে: আতাউর রহমান
তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘‘বিগত দিনে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি, এরকম অনেক সদস্য এখন নেই৷ এখন আমার হৃদয় ভারাক্রান্ত৷ পুলিশে আমি আজ ২৩ বছর৷ একসঙ্গে কাজ করেছি, কিছুদিন আগেও আমার থানায় ছিল এখন সে নেই৷ আসলে আমার পুরো পুলিশ সদস্য পরিবার, সত্যিকারভাবে আমরা ট্রমাটাইজড৷ তার মধ্যেই আমরা জনগণের প্রয়োজনেই কাজ করি৷ আমাদের ব্যর্থতা আমরা অনেক সময় জনগণকে বোঝাতে পারি না৷ আজকেও ফিরে আসা জনগণের জন্যই৷ জনগণ প্রয়োজন বোধ করেছে, পুলিশ না থাকলে কী হচ্ছে, সেই প্রয়োজনেই ফিরে আসা৷ জনগণকে বলব, আমাদেরকে আস্থায় নেওয়ার জন্য৷ আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি৷ আগামী দিনে সত্যিকারে মানুষের প্রয়োজনে যাতে এই বাহিনী থাকতে পারে, আমি আমার সহকর্মীদের নিয়ে এই সেবাগুলো অব্যাহত রাখার চেষ্টা করব৷''

মোহাম্মদপুর থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘‘আমার থানাটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আমরা টেবিল-চেয়ার পেতে থানার কাজ শুরু করেছি৷''

অপারেশনাল কাজ অর্থাৎ বাইরে নিরাপত্তা দেওয়ার কাজটি কবে নাগাদ শুরু হতে পারে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সে জন্য একটু সময় লাগবে৷ আমরা চেষ্টা করছি, ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলছি৷ তারা যেভাবে নির্দেশনা দেবেন আমরা সেভাবেই আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করব৷''

মতামত দিন