তওবা করা নিঃসন্দেহ ভালো কাজ
গুনাহ মাফের ঘোষণা শুনলে, কে না খুশি হবেন? আর গুনাহ মাফের এ ঘোষণা যদি আসে মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে। তখন কী আনন্দের সীমা থাকবে কোনো? বান্দার গুনাহ মাফের জন্য ক্ষমা চাওয়া, কৃত অন্যায় অনাচারের বিষয়ে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করে ফিরে আসা, পাপ ছেড়ে পুণ্যের পথ গ্রহণ করা, এর সঙ্গে তওবা করা নিঃসন্দেহ ভালো কাজ। এমনকি এতে রয়েছে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও খুশির সংবাদ।আমাদের মধ্যে এমন কে আছেন? যিনি এ কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারবেন যে আমি জীবনেও গুনাহ করিনি। কোনো অন্যায় কাজ আমার দ্বারা সংগঠিত হয়নি! আমি কখনো কোনো মন্দ ও পাপ কাজে জড়িত ছিলাম না। এমন মানুষ আমাদের মধ্যে আছেন কী কেউ? না থাকার সংখ্যাটাই বেশি হবে নিশ্চিত বলা যায়। আমরা সকলেই গুনাহগার। কোনো না কোনো কারণে আমরা অপরাধী। পাপের বোঝা নিয়েই আমরা ছুটে চলছি অবিরত। তবে আল্লাহর ক্ষমার ওয়াদাও কিন্তু আমাদের জন্য অফুরন্ত। তিনি গাফফার, ক্ষমাকারী। ক্ষমা করতে ভালোবাসেন।
সাহাবি হারিস ইবনু সুওয়াইদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
''আবদুল্লাহ (রা.) অসুস্থ ছিলেন। তার সেবা করার জন্য কোনো এক সময় আমি তার নিকট প্রবেশ করলাম। তিনি দুটি হাদিস বর্ণনা করলেন। একটি নিজের পক্ষ থেকে এবং অপরটি রসুলুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে। তিনি বলেন, আমি রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ কথা বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তায়ালা তার মুমিন বান্দার তওবার কারণে ঐ ব্যক্তির চেয়েও অধিক আনন্দিত হন। ''
যে লোক ছায়া-পানিহীন আশঙ্কাপূর্ণ বিজন মাঠে ঘুমিয়ে পড়ে এবং তার সাথে থাকে খাদ্য পানীয় সহ একটি সওয়ারি। এরপর ঘুম হতে সজাগ হয়ে দেখে যে, সওয়ারি কোথাও অদৃশ্য হয়ে গেছে। তারপর সে সেটি খুঁজতে খুঁজতে তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়ে এবং বলে, আমি আমার পূর্বের জায়গায় গিয়ে চিরনিদ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে মারা যাবো। (এ কথা বলে) সে মৃত্যুর জন্য বাহুতে মাথা রাখল।
কিছুক্ষণ পর জাগ্রত হয়ে সে দেখল, পানাহার সামগ্রী বহনকারী সওয়ারি তার কাছে ফিরে এসেছে। (সওয়ারি এবং পানাহার সামগ্রী পেয়ে) লোকটি যে পরিমাণ আনন্দিত হয়, মুমিন বান্দার তওবার কারণে আল্লাহ তায়ালা তার চেয়েও বেশি আনন্দিত হন। (সহিহ মুসলিম)
আর গুনাহ থেকে তওবাকারী গুনাহ মুক্ত নিষ্পাপ। যার কোনো গুনাহ নেই। পাপ নেই। সাহাবি আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ রা. থেকে বর্ণিত– নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, গুনাহ থেকে তওবাকারী নিষ্পাপ ব্যক্তিতুল্য। (সুনানে ইবনে মাজাহ)
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে গুনাহ মাফের জন্য তওবার তাওফিক দিন। গুনাহ মুক্ত জীবন যাপন করা। গুনাহকে বর্জন করার তাওফিক দান করুন। গুনাহ মুক্ত হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথকে সহজ করুন।
লেখক: খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর
মতামত দিন